ছাগল পালন পদ্ধতি (পাঠ ১৩)

সপ্তম শ্রেণি (মাধ্যমিক) - কৃষিশিক্ষা - কৃষিজ উৎপাদন | NCTB BOOK
666
Summary

ছাগল পালন বিষয়ক মূল পয়েন্টগুলো:

  • বাংলাদেশে ছাগল একটি জনপ্রিয় গৃহপালিত পশু।
  • ছাগী ৭-৮ মাসের মধ্যে বাচ্চা ধারণ করে এবং একসাথে ২-৩টি বাচ্চা জন্ম দেয়।
  • ছাগলের মাংস সুস্বাদু, ফলে বাজারে এর উচ্চ চাহিদা।
  • প্রচলিত পদ্ধতি: গ্রামে ছাগলকে মাঠে বা বাড়ির আশেপাশে পালন করা হয় এবং বাড়তি খাদ্য সরবরাহ করা হয় না।
  • বাণিজ্যিক পদ্ধতি: বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতির মাধ্যমে ছাগলের বাসস্থান, খাদ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
  • আবদ্ধ পদ্ধতি: সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় পালনের জন্য উঁচু ও শুকনা জায়গায় ঘর তৈরি করা হয়।
  • অর্ধ-আবদ্ধ পদ্ধতি: এখানে আবদ্ধ ও ছাড়া অবস্থার সমন্বয় থাকে, যা ছাগলের খাদ্য ও স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে।

শিক্ষার্থীদের জন্যঃ শিক্ষার্থীরা দলবদ্ধভাবে ছাগল পালনের পদ্ধতিগুলোর সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনা করে উপস্থাপন করবে।

নতুন শব্দ: আবদ্ধ, অর্ধ-আবদ্ধ, দানাদার খাদ্য

বাংলাদেশে ছাগল অন্যতম গৃহপালিত পশু। ছাগী ৭-৮ মাসের মধ্যে বাচ্চা ধারণ করার ক্ষমতা অর্জন করে। এরা একসাথে ২-৩টি বাচ্চা দেওয়ার কারণে কৃষকের নিকট খুব জনপ্রিয়। একটি ছাগল খাসি ১২-১৫ মাসের মধ্যে ১৫-২০ কেজি হয়ে থাকে। ছাগলের মাংস খুব সুস্বাদু। তাই বাজারে এ ছাগলের অনেক চাহিদা রয়েছে।

প্রচলিত পদ্ধতিতে ছাগল পালন : গ্রামে ছাগলকে মাঠে, বাগানে, রাস্তার পাশে বেঁধে বা ছেড়ে দিয়ে পালন করা হয়। সাধারণত ছাগলকে বাড়ি থেকে কোনো বাড়তি খাদ্য সরবরাহ করা হয় না। কৃষক বর্ষাকালে বিভিন্ন গাছের পাতা কেটে ছাগলকে খেতে দেয়। রাতে ছাগলকে নিজেদের থাকার ঘর বা অন্য কোনো ঘরে আশ্রয় দেয়।

বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ছাগল পালনের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। এতে ছাগলের বাসস্থান, খাদ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়। বৈজ্ঞানিক উপায়ে আবদ্ধ ও অর্ধ-আবদ্ধ পদ্ধতিতে ছাগল পালন করা হয়। যাদের চারণভূমি বা বাঁধার জন্য কোনো জমি নেই সেখানে আবদ্ধ পদ্ধতিতে ছাগল পালন করা হয়।

আবদ্ধ পদ্ধতিতে ছাগল পালন: এখানে সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় ছাগল পালন করা হয়। ছাগলের ঘরের জন্য উঁচু ও শুকনা জায়গা নির্বাচন করতে হয়। এ পদ্ধতিতে ঘর তৈরি করার জন্য কাঠ, বাঁশ, টিন, ছন, গোলপাতা ব্যবহার করে কম খরচে ঘর তৈরি করা যায়। ঘর তৈরি করার সময় প্রতিটি বয়স্ক ছাগলের জন্য ১ বর্গমিটার (১০ বর্গফুট) জায়গার প্রয়োজন হবে। মেঝে সেঁতসেঁতে হলে ছাগলের ঘরে মাচা তৈরি করে দিতে হবে। এখানে ছাগলকে সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় প্রয়োজনীয় সবুজ ঘাস, দানাদার খাদ্য ও পানি সরবরাহ করা হয়। তবে প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টার জন্য ঘরের বাইরে ঘুরিয়ে নিয়ে এলে এদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। নতুন ছাগল দিয়ে খামার শুরু করলে প্রথমেই সম্পূর্ণ আবদ্ধ অবস্থায় রাখা যাবে না। আস্তে আস্তে এদের চারণ সময় কমিয়ে আনতে হবে। নতুন পরিবেশের সাথে অভ্যস্ত হলে খাদ্য গ্রহণে আর সমস্যা দেখা দিবে না।

অর্ধ-আবদ্ধ পদ্ধতিতে ছাগল পালন: এ পদ্ধতিতে ছাগল পালনের সময় আবদ্ধ ও ছাড়া পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। খামারে আবদ্ধ অবস্থায় এদের দানাদার খাদ্য সরবরাহ করা হয়। মাঠে চারণের মাধ্যমে এরা সবুজ ঘাস খেয়ে থাকে। বর্ষার সময় মাঠে নেওয়া সম্ভব না হলে সবুজ ঘাসও আবদ্ধ অবস্থায় সরবরাহ করতে হবে।

কাজ: শিক্ষার্থীরা ভাগ হয়ে দলগতভাবে ছাগল পালনের বিভিন্ন পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধা আলোচনার মাধ্যমে লিখে শ্রেণিতে উপস্থাপন করবে।

নতুন শব্দ: আবদ্ধ, অর্ধ-আবদ্ধ, দানাদার খাদ্য

Content added By
Promotion
NEW SATT AI এখন আপনাকে সাহায্য করতে পারে।

Are you sure to start over?

Loading...